তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রিভিউ শুনানি ১৯ জানুয়ারি
- By Jamini Roy --
- 01 December, 2024
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন নিয়ে নতুন দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রবিবার (১ ডিসেম্বর), প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগ এই আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
শুনানিতে বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষে আলাদা আবেদন জানানো হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। জামায়াতও একই বিষয়ে আবেদন জানায়। তবে আদালত আগামী ১৯ জানুয়ারির শুনানির পর আর কোনো সময় দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন।
২০১১ সালের ১০ মে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করে। তবে, রায়ে বলা হয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে ১০ম এবং ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। এই রায় নিয়ে বিএনপি, জামায়াত, এবং বিভিন্ন পক্ষ থেকে পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১৬ অক্টোবর আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন। এতে দলটি ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানায়।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার গত ২৩ অক্টোবর রিভিউ আবেদন করেন। অন্যদিকে, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারও পৃথকভাবে এই বিষয়ে আবেদন করেছেন।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস হয়, যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করে। তবে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন আইনজীবী।
২০১১ সালের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে বাতিল করে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে দুইটি নির্বাচন আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া হয়। রায়ে উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে সংসদ ইচ্ছানুযায়ী এই ব্যবস্থার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই রিভিউ আবেদনগুলো বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। বিএনপি এবং জামায়াতের আবেদনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দেশে বিতর্ক চলছে। বিরোধী দলগুলো দাবি করে আসছে যে, এই ব্যবস্থা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। অন্যদিকে, সরকার পক্ষ দাবি করে, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান পদ্ধতিই যথাযথ।
আদালত জানিয়েছে, ১৯ জানুয়ারির শুনানিতে সব পক্ষের বক্তব্য শোনা হবে। এরপর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। রিভিউ আবেদনটি গৃহীত হলে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে।
১৯ জানুয়ারির শুনানি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভবিষ্যৎ এবং দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।